Select Page

কিরো – হাতের রেখা কথা বলে (পর্ব-১)

কিরো – হাতের রেখা কথা বলে (পর্ব-১)

১৯৮৩ সাল। সবেমাত্র এসএসসি পরীক্ষা শেষ হয়েছে। থাকি সরকারী কোয়ার্টার মিরপুর ১৪ তে ২০ নম্বর বিল্ডিং এ। সুলতানারা থাকে আমাদের পেছনেই ১৭ নম্বর বিল্ডিং এ। মনের অজান্তেই ১৭ সংখ্যাটা আমার প্রিয় হয়ে গেছে। এই বিল্ডিং এর চার ধারে কতো যে চক্কোর কেটেছি! এই ১৭ নিয়ে অন্য কোনো একদিন বলবো। আজ বলি অন্য কথা।

একটি টিউশনির অফার পেলাম। পড়াতে হবে ১৭ নম্বর বিল্ডিং এর একটা বাসায়। যদিও সুলতানাদের বাসা অন্য সিড়িতে। তবুও ১৭ বলে কথা।

বিকেল বেলা। পড়াতে গেলাম। বারান্দায় ডাইনিং টেবিলেই পড়াতে শুরু করলাম। দুটো ছেলে – একজন ক্লাস সিক্সে আরেকজন এইটে। অংক পড়াতে হবে।

পড়াতে পড়াতে হঠাত টেবিলের ওপর একটা বইয়ের দিকে আমার নজর যায়। বইটা হাতে নেই। ছাত্রদের পড়াতে পড়াতে বইটার পাতা উল্টাতে থাকি। কিরোর লেখা হস্তরেখার বই – হাতের রেখা কথা বলে।

ঘন্টাখানেক পড়ানো শেষ করে বিদেয় দেবার সময় খালাম্মা’কে বললাম – বইটা আমি নেবো। উনি দিতে রাজি হলেন তবে একটা শর্তে। আগামীকাল পড়াতে আসার সময় বইটা ফেরত দিতে হবে আর আমি যেনো তার হাত দেখে দেই। আমি রাজি হয়ে গেলাম।

বইটা বেশি মোটা ছিলো না। রাতের মধ্যেই পুরোটা পড়ে শেষ করলাম।

পরের দিন পড়াতে গেলাম। বইটা সাথে নিয়ে গেলাম ফেরত দিতে। টেবিলে বসে অপেক্ষা করছি ছাত্রদের জন্য। কিন্তু খালাম্মাই চেয়ার টেনে নিয়ে আমার সামনে বসলেন। হাতটা বাড়িয়ে দিয়ে বললেন – দেখে দাও। আমি ধারনাও করিনি সত্যি সত্যি আমার হাত দেখে দিতে হবে। আমি লজ্জায় বারবার বলতে থাকলাম, এতো অল্প সময়ে আমি তেমন কিছু পড়ে বুঝতে পারিনি। তাকে বললাম, বইটা আজও নিয়ে যাবো। আরো ভালোভাবে পড়ে দেখবো। তারপর চেষ্টা করবো আপনার হাত দেখে দেবার।

উনি নাছোড় বান্দার মতো বললেন, – হাত দেখে দিতেই হবে। কোথায় পালাই বুঝতে পারছিলাম না। অগত্যা হাত দেখতে লাগলাম।

ঝরঝর করে বলে যেতে লাগলাম। উনি হা করে আমার দিকে বিস্ময়ে তাকিয়ে আছেন। কয়েক মিনিট বলার পর থাকলাম। দেখি উনার বিস্ময় যেনো কাটছেই না। অবশেষে বললেন, তুমি এক রাতের মধ্যে বইটা পড়ে এতোকিছু বললে কিভাবে। তুমি তো সব মিলিয়ে দিয়েছো। কিভাবে সম্ভব করলে।

সেদিন বেশিক্ষন আর পড়ানো হলো না। ফিরে আসার সময় খালাম্মা আমাকে ডেকে বইটা আবার আমাকে দিয়ে বললেন, বইটা নিয়ে যাও। এটা তোমাকে দিলাম।

চলবে…

About The Author

Alam M

I’m Alam — a writer of words and a seeker of stories hidden in everyday moments. Through my writing, I aim to shape fleeting thoughts into sentences that linger in the mind long after they’ve been read. Words are my canvas, and stories are the colors I paint with.